একশো দিনের কাজে দুর্নীতি : পোষ্টার পূর্ব বর্ধমানের বড়শুল ১ পঞ্চায়েতের আমড়া গ্ৰামে

23rd February 2020 বর্ধমান
একশো দিনের কাজে দুর্নীতি : পোষ্টার পূর্ব বর্ধমানের বড়শুল ১ পঞ্চায়েতের আমড়া গ্ৰামে


একশো দিনের কাজে দেশের সেরা শিরোপা পেয়েছে পূর্ব বর্ধমান। সেই জেলারই বড়শুল ১ পঞ্চায়েতের আমড়া গ্রামে পড়েছে ১০০ দিনের কাজের দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ নিয়ে পোস্টার। আর সেই পোস্টার ঘিরে শনিবার সকাল থেকে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে সমগ্র বড়শুল এলাকায়। কারা এই পোস্টার লাগিয়েছে তা কারুর জানা না থাকলেও নড়েচড়ে বসেছে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বও এই পোস্টার কাণ্ড নিয়ে স্বোচ্চার হয়েছে। তাঁরা পোস্টার  মাধ্যমে উঠেআসা ১০০ দিনের কাজের দূর্ণীতির পূর্ণাঙ্গ  তদন্তের দাবি তুলেছেন  ।  তৃণমূল পরিচালিত বড়শুল ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে আমড়া গ্রাম। এই  গ্রামের মানুষজন এদিন সকালে স্থানীয় বাজার ও তার আশেপাশে  পোস্টার গুলি দেখতে পান । গ্রামবাসী বাপ্পাদিত্য ঘোষ শান্তনু  মজুমদার প্রমুখরা বলেন ,“ওই পোস্টার মাধ্যমে কেউ ১০০ দিনের কাজের নানা ধরনের দুর্নীতির বিষয়টি  অভিযোগ আকারে তুলে ধরেছে । মূলত ১০০ দিনের কাজের দুই সুপারভাইজার নবকুমার দাস ও চন্দন  বাগের  বিরুদ্ধে দুরনীতির  অভিযোগ আনা হয়েছে । পোস্টার মাধ্যমে আনা অভিযোগে দাবি করা হয়েছে দুই সুপারভাইজার বেআইনিভাবে নিজেদের পরিবারের সদস্যদের জব-কার্ড তৈরি করেছেন।এছাড়াও সুপারভাইজাররা ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নিজেদের আত্মীয় মাধ্যমে  বেশ কয়েক হাজার টাকা নিজেদের অ্যাকাউন্টে ঢুকিয়ে নিয়েছেন।” আমড়া গ্রামের অন্যসকল বাসিন্দারা দাবি করেছেন ,‘পোস্টার মাধ্যমে আনা অভিযোগের সবটাই সত্য । তারা অভিযোগ বলেন, আমড়া গ্রামের প্রকৃত গরিব মানুষকে জব কার্ড দেওয়া হয় না। জবকার্ড পেতে চাইলে  তাদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়। অথচ শাসকদল  নিযুক্ত সুপারভাইজাররা ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতি  ও স্বজনপোষণ ও করেচলেছে। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন এই দুর্নীতির আগা পাস্তারা সব জেনেও  নিশ্চুপ থাকেন । ’ যদিও কে বা কারা এই পোস্টার লাগিয়েছেন সে সম্পর্কে গ্রামবাসীরা কিছুই বলতে চাননি। তবে তাঁদের অনুমান তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই পোস্টার মাধ্যমে ১০০ দিনের কাজের দূর্নীতির পর্দা ফাঁস হয়েছে । সুপারভাইজার নবকুমার দাস অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।  তিনি দাবি করেছেন, তাঁর স্ত্রী ও পুত্র সরকারিভাবে জব কার্ড পেয়েছেন। কোন অনিয়ম তিনি করেন নি । কাউকে  ঠকানও নি।সুপারভাইজার এমনটা দাবি করলেও পঞ্চায়েতের প্রধান দিলীপ সাই  বলেন , অভিযোগ সামনে আসার পরেই অভিযুক্ত  সুপারভাইজাদের  বরখাস্ত করেছেন। একই সঙ্গে প্রধান স্পষ্ট জানিয়ে দেন সমস্ত  অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে । তদন্তে অনিয়ম ধরা পড়লে সুপারভাইজারদের শাস্তির ব্যবস্থাও করা হবে । জেলা বিজেপি সভাপতি সন্দীপ নন্দী বলেন , শুধু বড়শুল পঞ্চায়েত নয় ।শাসক দল পরিচালিত  জেলার সব পঞ্চায়েতেই ১০০ দিনের কাজ নিয়ে দুর্নীতি চলছে । মুখোশ খুলে যাওয়ায় বড়শুল ১ পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ সুপারভাইজারদের  বরখাস্ত করা হয়েছে বলে  বলছে । এটা আইওয়াশ ছাড়া আর কিছুই নয় । প্রশাসন তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন মাফিক ব্যবস্থা না নিলে বিজেপি কর্মীরা বৃহত্তর   আন্দোলনে নামবে । 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।